পর্যটকদের দায়িত্বঃ
১. সুন্দরবন ভ্রমণের নূন্যতম ৩ দিন পূর্বে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তার নিকট হতে সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য
নির্ধারিত ফরমে আবেদন করে অনুমতি গ্রহণ করা।
২. সুন্দরবনে প্রবেশের প্রাক্কালে অনুমতিপত্রে উল্লেখিত বন স্টেশনে লঞ্চ/'জলযানসহ উপস্থিত হয়ে নির্ধারিত যাবতীয় রাজস্ব পরিশোধ করা। ভ্রমণ শেষে নির্দেশিত ষ্টেশনে পাশ সমর্পণ করা।
৩. সুন্দরবনে প্রবেশপথে বা অবস্থান/ভ্রমণকালে বনকর্মী বা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য কর্তৃক পর্যটন সেবার মান যাচাই বা সুন্দরবনের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় যাচাই কল্পে নৌযান পরিদর্শনকালে পূর্ণ সহযোগিতা করা।
৪.অভয়ারণ্য এলাকায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত পৃথক এন্ট্রি ফি প্রদান করা।
৫. সুন্দরবনে নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত অবস্থানের প্রয়োজন হলে নিকটস্থ বন কর্মকর্তার নিকট হতে যুক্তিসঙ্গত কারণ জানিয়ে অতিরিক্ত সময়ের জন্য নির্ধারিত ফি প্রদান সহ অনুমতি গ্রহণ করা। কোনভাবেই তা সর্বোচ্চ নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত হবে না।
৬. সুন্দরবনে প্রবেশ করার পর জলে/স্থলে কোনভাবেই কোন আবর্জনা না ফেলা এবং জলযানের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।
৭. বন বিভাগের পূর্ব অনুমোদন ব্যতীত সুন্দরবনে রাত্রিযাপন না করা।
৮. সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ছাত্র/ছাত্রীদের হ্রাসকৃত রাজস্ব পরিশোধের সুবিধা গ্রহণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক নিজস্ব প্যাডে ভ্রমণকারীদের তালিকাসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তার অনুমতি গ্রহণ করা।
প্রতি ৩০ জন ছাত্র/ছাত্রীর অভিভাবক হিসেবে নূন্যতম ০১ জন শিক্ষক নিযুক্ত রাখা।
৯. সুন্দরবন ভ্রমণকালে কর্তব্যরত বন কর্মচারীদের সাথে শাভোনীয় আচরণ করা এবং দায়িত্বরত বন কর্মচারীর উপদেশমূলক নির্দেশনা প্রতিপালন করা।
১০. সুন্দরবন ভ্রমণের ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক থাকা। সুন্দরবনের জলে স্থলে বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ সম্পর্কে সচেতন থাকা।
১১. সুন্দরবনে দলছুট অবস্থায় একাকী চলাফেরা না করা। সাগর, নদী বা খালের পানিতে অবতরণ না করা এবং গোসল করা ও সাঁতার কাটা থেকে বিরত থাকা।
১২. সুন্দরবনের প্রাণীকূল ভয় পেতে পারে কিংবা তাদের জীবন সংকটাপন্ন হতে পারে কিংবা জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকির সৃষ্টি হতে পারে এমন কোন কর্মকান্ড বা আচার-আচরণ থেকে বিরত থাকা।
ট্যুর অপারেটরদের দায়িত্বঃ
১. স্বাভাবিক মাত্রার অধিক শব্দ সৃষ্টিকারী, অতিরিক্ত/কালো ধোয়া উদগীরণকারী বা ত্রুটিপূর্ণ কোন জলযান পর্যটক পরিবহনে ব্যবহার থেকে বিরত থাকা এবং পর্যটকবাহী লঞ্চে বর্জ্য রাখার ব্যবস্থা রাখা ।
২. পর্যটকদের সুন্দরবনে অবস্থানকালীন সময়ের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও পানীয় বনে প্রবেশের পূর্বেই জলযানে মজুদ রাখা।
৩. পর্যটকবাহী নৌযানে পর্যটক ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী পর্যাপ্ত প্রাথমিক চিকিৎসা, অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা ও লাইফ জ্যাকেটসহ অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামসহ মান সম্মত খাদ্য সরবরাহ এবং শয়ন ও বিশ্রামের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকা।
৪. পর্যটকবাহী লঞ্চে সৌর শক্তি ব্যবহারে সচেষ্ট থাকা। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে শব্দ সৃষ্টিকারী জেনারেটর বহন থেকে বিরত থাকা। রাত ১০,০০ টার পর জলযান ব্যবহৃত জেনারেটর বন্ধ রাখা।
৫.পর্যটকবাহী জলযানে কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমতি ব্যতীত কোন প্রকার জীবিত গরু/ছাগল/মহিষ/ভেড়া জাতীয় প্রাণী ৰা উল্লিখিত প্রাণীর মাংস বা রেড মিট বহন না করা।
৬. প্রতিটি জলযানের সাথে ছটো ইঞ্জিন, হস্তচালিত নৌকা/স্পিডবোট বহন করা এবং মূল জলযান/লঞ্চ থেকে ছাটো নৌকা/স্পিডবোটে নিরাপদে উঠানামার জন্য প্রইয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করা।
৭. প্রতিটি পর্যটকবাহী জলযানে নুন্যতম ১ জন প্রশিক্ষিত ট্যুর গাইড এবং ৪০ জনের অধিক পর্যটকের জন্য নূন্যতম ২ জন প্রশিক্ষিত ট্যুর গাইড রাখার ব্যবস্থা করা।
৮. সুন্দরবন ভ্রমণকালীন বনের বিভিন্ন স্থাপনা (জেটি, পন্টুন, ওয়াচ টাওয়ার, বিশ্রামাগার, ফুট ট্রেইল ইত্যাদি)
ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারে ফি প্রদান করা।
৯. সুন্দরবনে প্রবেশ ও নির্গমন কালে নির্ধারিত ষ্টেশনে উপস্থিত হয়ে প্রয়োজনীয় অনুমতি পত্র প্রদর্শন ও সরকারী রশিদ এর বিপরীতে রাজস্ব / ফি পরিশোধ করা।
১০. পর্যটকবাহী জলযানে বন বিভাগ কর্তৃক নিয়োগকৃত নিরাপত্তারক্ষীদের জন্য পৃথক কক্ষের ব্যবস্থা রাখা। নিরাপত্তারক্ষীর কক্ষে কোনো পর্যটক প্রবেশ/অবস্থান না করার বিষয় নিশ্চিত করা।
১১. সুন্দরবন প্রবেশ পথে বা প্রবেশের পর যে কোন স্থানে বনকর্মী/আইন শৃংখলা রক্ষাকারী কর্তৃক জলযান
তল্লাশীকালে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করা।
১২. সুন্দরবনের যেখানে সেখানে অকারণে লঞ্চ/জলযান নোঙর না করা। পর্যটকবাহী মূল জলযান বন বিভাগের
ব্যবহারের জন্য স্থাপিত জেটি বা পন্টুনের সাথে বাধা থেকে বিরত থাকা।
১৩. বনাভ্যন্তরে রাত্রিকালীন অবস্থানের ক্ষেত্রে পর্যটকের সংখ্যা সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর কর্তৃক নির্ধারিত রাত্রিকালীন ধারন ক্ষমতা বা ৭৫ জন (যেটি কম) এর অধিক না রাখা।
১৪. সুন্দরবনে নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত অবস্থানের প্রয়োজন হলে নিকটস্থ বন কর্মকর্তার নিকট হতে যুক্তিসঙ্গত কারণ জানিয়ে অতিরিক্ত সময়ের জন্য নির্ধারিত ফি প্রদান সহ অনুমতি গ্রহণ করা। তবে কোনভাবেই তা সর্বোচ্চ সময়সীমার অধিক হবে না।
১৫. বন অপরাধ সংঘটিত হতে দেখা গেলে বা আলামত পাওয়া গেলে নিকটস্থ বন অফিসে তা অবহিত করা এবং অপরাধ/দুর্ঘটনা উদঘাটন বা প্রতিরোধে বন কর্মীদেরকে সহযোগিতা করা।
১৬. সুন্দরবন ভ্রমণে অনুসরণীয় বিষয় এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে পর্যটকদের অবহিত করা।
১৭. আবহাওয়া ও জোয়ার ভাটার সময়সূচী অনুসরণ করে পটকদের নিরাপত্তার প্রতি সতর্ক রাখা।
১৮.বন কর্মীদের অবহিত না করে পর্যটকদেরকে ছটো নৌকা, স্পীডবোট ইত্যাদি যোগে বা পদব্রজে সুন্দরবনের
যত্র-তত্র ভ্রমণে বিরত থাকা।
১৯, অনুমতিপ্রাপ্ত নির্ধারিত রুটের বাহিরে ভ্রমণ না করা।
২০. সুন্দরবনে অবস্থান কালীন সময় বন বিভাগের কোন স্থাপনার ক্ষতি করা হলে তার জন্য ক্ষতিপূরণ দেয়া ।
২১. সুন্দরবনের প্রাণীকূল ভয় পেতে পারে কিংবা তাদের জীবন সংকটাপন্ন হতে পারে কিংবা জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকির সৃষ্টি হতে পারে এমন কোন কর্মকান্ড বা আচার-আচরণ থেকে বিরত থাকা।